রুপসীবাংলা৭১

তিতের সঙ্গে হুসাম সাফরানি ও তাঁর ছেলে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃতাঁর নাম হুসাম সাফারানি। জন্ম ফিলিস্তিনে, থাকেন জর্ডানে। কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ম্যাচ দেখতে গিয়ে যে তাঁর জীবনে এমন ঘটনা ঘটবে, সেটি হয়তো কখনো স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি।সেদিন তিনি উপভোগ করতে গিয়েছিলেন ব্রাজিল-সার্বিয়া ম্যাচ। যে ম্যাচে ব্রাজিল রিচার্লিসনের জোড়া গোলে জিতেছিল ২-০ ব্যবধানে। রিচার্লিসনের সঙ্গে বাইসাইকেল কিকের গোলটি উদ্‌যাপন করে ফুরফুরে মেজাজে স্টেডিয়াম থেকে বের হয়েছিলেন। দোহার মেট্রো স্টেশনে গেলেন, ধরবেন হোটেলমুখী ট্রেন। স্টেশনে হঠাৎই দেখলেন এক নারী তাঁর ঘুমন্ত শিশুকে নিয়ে ট্রেনে উঠতে হিমশিম খাচ্ছেন। সাফারানি তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে গেলেন। শিশুটিকে কোলে নিলেন। এমন তো হতেই পারে।

তিতে মুগ্ধ ফিলিস্তিনি যুবকের মানবিকতায় ছবি: টুইটার

অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, ঘটনাচক্রে কোলে নেওয়া সেই শিশুটি ছিল আদেনর লিওনার্দো বাচ্চি নামের এক ব্রাজিলিয়ানের নাতি। তিনি আর কেউ নন, ব্রাজিল ফুটবল দলের কোচ, তিতে! শিশুটিকে কোলে নিয়ে মাকে সাহায্য করার সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। সেটি চোখে পড়ে তিতেরও। সাফারানির পরোপকারী মনোভাব ছুঁয়ে যায় তাঁকে। তখন থেকেই এই মানুষটিকে খুঁজছিলেন ব্রাজিল কোচ। এমন মানবিক মূল্যবোধ যাঁর মধ্যে, তাঁর সঙ্গে খুব করেই পরিচিত হতে চাচ্ছিলেন শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গেল সাফারানিকে, তিনি তো অবাক। স্বয়ং ব্রাজিল কোচ তাঁর সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায়, স্বপ্ন নয়তো! ক্যামেরুনের সঙ্গে ম্যাচের আগে অনুশীলন সেশনে সাফারানির নিমন্ত্রণ ছিল। তিনি গেলেন তাঁর ছেলেকে নিয়ে। সেখানে দেখা হলো তিতের সঙ্গে, কথাও হলো। তিতে তাঁকে উপহার দিয়েছেন ব্রাজিলীয় ফুটবলারদের সই করা একটি হলুদ জার্সি।

তিতে বলেছেন, ‘ফুটবল আমাদের অনেক দারুণ দারুণ মুহূর্ত উপহার দেয়, এটি তেমনই একটি। আমি সাফারানির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছি, কারণ সে এমন একজন মানুষ, যাঁর মধ্যে এমন কিছু আছে, যেটি ফুটবলেরও অনেক ঊর্ধে।’সাফারানি ব্রাজিলের পাঁড় ভক্ত। কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে এসে তিনি যে এমন একটি মুহূর্ত উপহার পাবেন, সেটি তাঁর কাছে স্বপ্নের মতো ব্যাপারই, ‘এমন কিছু কখনোই ভাবিনি। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটিই স্বপ্নের মতো। মনে হচ্ছে, গোটা দুনিয়ার মালিক আমি।’ব্রাজিলের অনুশীলনে আমন্ত্রণ। কোচ তিতের সঙ্গে আলাপচারিতা। সাধারণ একজন ফুটবলপ্রেমীর জন্য এর চেয়ে দুর্দান্ত ব্যাপার আর কী হতে পারে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *