সরকারী দলের নির্বাচনী ইশতেহারে পদত্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবীতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

শনিবার (১৬ জুলাই) কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারী দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা এ দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে পর হিন্দুদের যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন, হিন্দু মা-বোনদের ধর্ষণ করা হয়েছিলো, আমরা সেদিন ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে বেড় হয়ে বলেছিলাম, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। ৭২ এর সংবিধান ফিরিয়ে দাও, দিতে হবে। আজ ৭২ সালের সংবিধান রাষ্ট্রীয় ভাবে সংযুক্ত হয়েছে। তার পরেও আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশের সাড়ে ৩ কোটি সংখ্যালঘুদের উপরে রাত নাই, দিন নাই অত্যাচার-নির্যাতন, মা-বোনদের ধর্ষণ আর ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ সুনামগঞ্জের শাল্লা থেকে নড়াইল । আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, আমরা আর দুর্বল নয়। আমাদের শক্তি আছে।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন  হচ্ছে, সরকার নির্বাক।  হিন্দু শিক্ষকদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। এগুলো একটি নীল নকশার অংশ। কেনো এর  বিচার হয় না। ধর্মীয় কুলাংগারদের শাস্তির আওতায় আনুন। না হলে আমরাও রক্তের বন্যা বইয়ে দিতে পারি। কিন্ত আমরা সেটা চাই না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা নির্বাচন বয়কট করবো। সংখ্যালঘুদের রক্ষায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যে ওয়াদা করেন তিনি সেটা পূরণ করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তারা আও বলেন,আমরা বারবার লক্ষ করছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকার পরও ধর্মীয় জতিগত সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে যখনই সরকারের সঙ্গে কথা বলছি, তখনই সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে আমরা দেখছি, আর হবে না।  বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একটি কথা বলতে চাই,  আমরা আর দেখতেও চাই না, অপেক্ষও করতে চাই না।  

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতার বলেন, ধর্মীয় জতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্বাচনে সরাসরি ভোট দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিতে ক্ষমতায় এনেছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রাজপথে রক্ত দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাচিয়ে রেখেছে। আমরা জানি কিভাবে আমাদের দাবি আদায় করতে হয়।   আমাদের অস্তিত্ব যদি বিলিন হয়ে যায়, তাহলে আমরাও সিদ্বান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য হবো,  কিভাবে দেশ পরিচালিত হবে, কার হাতে দেশ চলবে, কার মাধ্যমে দেশ চলবে। সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আমরা বাধ্য হবো।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দাবিগুলো হলো: সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন,বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন,অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন দ্রুত বাস্তবায়ন,পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন,সমতলের আদিবাসীদের জন্যে পৃথক ভূমি কমিশন গঠন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সভাপতি ঊষাতন তালুকদা, আরেক  সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক, আরেক সভাপতি নির্মল রোজারি,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার, শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. অরুণ কুমার গোস্বামী, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ড. সোনালী দাস, বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *