নিজস্ব প্রতিনিধিঃ-মাদক বিরোধী সংগঠন এন্টি ড্রাগ সোসাইটির উদ্যোগে ২৭ জুন সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের (২য় তলা) জহুর হোসেন চৌধুরী হলে “মাদকের ভয়াবহতা থেকে তরুন ও যুবসমাজ রক্ষায় করণীয়” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি আশ্রাফুর রহমান ফারুক এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিউজ ও বাংলাদেশের খবর এর সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব। প্রধান আলোচক ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ জাফরুল্লাহ কাজল। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) দপ্তর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম অমর, সিনিয়র সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, আসাদুজ্জামান বাবুল, কাজী কবির হোসেন টিটু, হুমায়ুন আহমেদ ও সংগঠনের প্রচার সম্পাদক এস এম তাজুল ইসলাম প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট কামরুল হাসান দর্পন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, জাতি আজ মাদকের ভয়াবহতার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে। যুবসমাজকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নাই। প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর একার পক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। দরকার সামাজিক সচেতনতা ও জেলা-উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন এমনকি গ্রাম পর্যায়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা মাদককে না বলা। বর্তমান সময়ে মাদক নানা রূপ পরিবর্তন করছে। আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় ঔষধ অতিমাত্রায় ব্যবহার করে যুবসমাজ নেশায় আসক্ত হচ্ছে। তাই বলে আমাদের প্রয়োজনীয় ঔষধ ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বক্তারা আলোচনায় বলেন বাংলাদেশের একমাত্র উপজেলা সাভার। যেখানে মাদক বিক্রেতার বাড়ীতে লিখে রাখা হয় মাদক বিক্রেতার বাড়ী এবং ঐ মাদক কারবারি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার কারণে মাদক ব্যবসা থেকে সরে আসে না।

এভাবেই দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়নে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনসচেতনতা, সভা-সেমিনার, স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটিগুলোতে মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও যুবসমাজকে অবহিত করা হলে এই ভয়াবহতা থেকে পরিত্রাণ সম্ভব। বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়িত করতে হলে যুবসমাজকে রক্ষার বিকল্প নাই, তা না হলে মেক্সিকোর মতো বাংলাদেশ সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। সভায় বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কিছু কালোবাজারি লুটেরাশ্রেণীর লোকজন হঠাৎ কোটিপতি হওয়াতে তাদের ছেলে মেয়েরা আধুনিকতার নামে মাদকের নেশায় আসক্ত হচ্ছে। এমনকি ১৯৮০ সালের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মাদকের নানান নাম ও শ্রেণী পরিবর্তন করেছে। বর্তমান সময়ে মাদকের এমন কিছু নাম শোনা যাচ্ছে যেগুলো মানুষ কখনও কল্পনাও করতে পারে নাই। মাদকের ভয়াবহতা থেকে জাতিকে রক্ষায় প্রতিদিন মামলা হচ্ছে, মাদক বহনকারীরা জেল খানায় যাচ্ছেন, কিন্তু মাদকের নেশা ও ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে না। তাই সামাজিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে মাদকের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। একা সরকার ও প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমাদের আগামীর অঙ্গীকার হোক দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা পর্যায়ে সভা-সেমিনার করে মাদকের ব্যবহার থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *